ভাষা এবং মাতৃভাষা কাকে বলে? ভাষার প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যবহার

what is language

( সম্মানিত দর্শক বৃন্দ আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন )

What is language – ভাষা কাকে বলে?

আপনাদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য, এই পোস্টটি লেখা হয়েছে।

আশা করছি পোস্ট থেকে জানতে পারবেন ভাষা কাকে বলে?।

এবং মাতৃভাষা কি ?ভাষার প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যবহার সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ভাষা কাকে বলে?

ভাষার ইংরেজি হচ্ছে – Language

মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে কথা বলে অথবা লিখে মনের ভাব প্রকাশ করে। মানুষ ছাড়াও আল্লাহর সৃষ্টি জগতে আরো অনেক প্রাণী রয়েছে।

তারাও কিন্তু কোন না কোন ভাবে অঙ্গী ভঙ্গি করে তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে।

মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য একমাত্র কৌশল হচ্ছে ভাষা।

কারন মানবজাতির মুখের কথা আর অন্যান্য প্রাণীকুলের অঙ্গী ভঙ্গি হচ্ছে তাদের ভাষা।

সুতরাং সহজে বলতে গেলে বলা যায় যে , মানুষ জাতি বা প্রাণী জাতি তাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য যে মাধ্যম ব্যবহার করে, তাকে ভাষা বলে।

অতএব মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য যে অর্থপূর্ণ ধ্বনি ও অঙ্গী ভঙ্গি ব্যবহার করে, তাকে ভাষা বলে।

মাতৃভাষা কাকে বলে?

what is language এখন আপনারা জানতে পারবেন মাতৃভাষা কি? মাতৃভাষা মানে হচ্ছে মায়ের ভাষা। একজন মানুষের প্রাথমিক বা স্থানীয় ভাষাকে বুঝায়। মা-বাবার মুখ থেকে প্রথমে যে ভাষা শিখে সেই ভাষাকে মাতৃভাষা বলে। একজন শিশু যখন দুনিয়াতে আসে এবং আস্তে আস্তে মা বাবার মুখে বিভিন্ন কথা শুনে এবং কয়েক বছর পর সেই কথা বা ভাষা নিজের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে এবং আরো বিভিন্ন কথা খুবই স্পষ্টভাবে বলতে শুরু করে সেই ভাষাকে মাতৃভাষা বলে। আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে বলা যায় যে মা-বাবার মুখ থেকে শোনা ভাষা এবং যে অঞ্চলে জন্ম গ্রহণ করেছে সে অঞ্চলের ভাষাকে মাতৃভাষা বলে। এক একটি রাষ্ট্রের এক এক রকম ভাষা হয়ে থাকে। কোন একটি রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট ভাষা কে রাষ্ট্রীয় ভাষা বলে। আবার একই রাষ্ট্রে অঞ্চল ভিত্তিক বিভিন্ন ভাষা হয়ে থাকে। এই অঞ্চল ভিত্তিক ভাষা গুলি হল আঞ্চলিক ভাষা।

ভাষা কত প্রকার ও কি কি?

what is language আল্লাহর এই সৃষ্টি জগতে অনেকগুলো রাষ্ট্র আছে।

এক একটি রাষ্ট্রে এক এক রকম ভাষা হয়ে থাকে। আবার একই রাষ্ট্রে অনেকগুলি আঞ্চলিক ভাষা হয়ে থাকে।

অনেকেই নিজস্ব রাষ্ট্রীয় ভাষা ব্যবহার করে আবার অনেকেই স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করে।

সুতরাং একটি রাষ্ট্রে শুধু একটি ভাষা হয়না কয়েকশ ভাষা হয়ে থাকে।

তাই বিশেষজ্ঞদের মতে আল্লাহর তৈরি এই বিশ্বে প্রায় চার হাজারেরও উপরে ভাষা আছে।

এত প্রকারের ভাষা নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয় তাই কয়েকটি ভাষা নিয়ে আলোচনা করা হল।

আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা – বাংলা
ভারতের রাষ্ট্রীয় ভাষা – হিন্দি
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা – উর্দু
ইরানের রাষ্ট্রীয় ভাষা – ফার্সি
ইরাকের রাষ্ট্রীয় ভাষা – আরবি
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় ভাষা -আরবি
ওমানের রাষ্ট্রীয় ভাষা – আরবি
কাতারের রাষ্ট্রীয় ভাষা – আরবি
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় ভাষা – মালয়
আমেরিকার রাষ্ট্রীয় ভাষা – ইংরেজি ইত্যাদি।
একটি রাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় ভাষা ছাড়াও আরো বিভিন্ন প্রকারের ভাষা রয়েছে। এক একটি অঞ্চলের মানুষ একেক রকমের ভাষা ব্যবহার করে থাকে। অঞ্চলভিত্তিক এই ভাষাগুলোকে আঞ্চলিক ভাষা বলে।

ভাষার প্রয়োজনীয়তা কি?

মানুষের মুখের ভাষা হচ্ছে আল্লাহর দেওয়া একটি বড় দান। একজন মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য এই ভাষা খুবই প্রয়োজনীয়। যে মানুষের মুখে কোন ভাষা নেই বা মুখ থেকে কোন ভাষার শব্দ বের হয় না সেই মানুষ জানে মুখের ভাষা আল্লাহর দেওয়া কত বড় একটি দান। এই ভাষার মাধ্যমে একজন মানুষ আরেকজন মানুষের সঙ্গে কথোপকথন করে মতবিনিময় করে। একজন মানুষের নিত্যপ্রয়োজনে এই মুখের ভাষা খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। একজন মানুষের জীবনযাত্রার অগ্রগতি বাড়াতে এই ভাষা প্রয়োজন হয়। মানুষের চাকরি ব্যবসা-বাণিজ্য এসব পরিচালনা করার জন্য ভাষার প্রয়োজন হয়। এই মূল্যবান মুখের ভাষা দেওয়ার জন্য আল্লাহকে শুকরিয়া জানানো প্রয়োজন।

ভাষার ব্যবহার

মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষের মুখে ভাষা দিয়েছেন তাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য এই মুখের ভাষা মানুষ নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে। শুধু মুখে ভাষা আছে বলে যেমন তেমনভাবে ব্যবহার করলে এই ভাষা মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানুষ যদি খারাপ ভাষা ব্যবহার করে তাহলে এর আমলনামায় গুনাহ লিপি করা হয়। একজন মানুষের ভদ্রতা সভ্যতা প্রকাশ পায় তার আচার-আচরণে। একজন মানুষ যদি তার মুখের ব্যবহার খারাপ করে তাহলে মানুষ তাকে সহজে খারাপ বলে গণ্য করে।

আবার একজন মানুষ যদি তার মুখের ব্যবহার সুন্দর করে তাহলে মানুষ তাকে ভালো বলে। এই ভাষার মাধ্যমে একজন মানুষের সথে আরেকজন মানুষের বন্ধুত্ব এবং শত্রুতা তৈরি হয়। তাই এই মানব সমাজে মিলেমিশে বসবাস করার জন্য মুখের ভাষা খুবই সভ্য ভাবে ব্যবহার করা উচিত। প্রচলিত ভাবে একটি বাক্য আছে যে ব্যবহারে নাকি বংশের পরিচয় হয়। কেউ যদি তার মুখের ভাষা ভালো করে তাহলে তার পরিচয় ভালোভাবে প্রকাশ পায়। আর যে মুখের ভাষা খারাপ করে তার পরিচয় খারাপ হিসেবে পাই। তাই যে কোন মানবজাতির প্রয়োজন একজন মানুষের সঙ্গে আরেকজন মানুষের খুবই সভ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করা। একজন মানুষ আরেকজন মানুষের সঙ্গে সভ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কাজেই সকলের উচিত একজন আরেকজনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ কথা বলা।

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ, আশা করছি এই পোস্ট থেকে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এই পোস্টে কোনরকম ভুল হয়ে থাকলে তাহলে সংশোধনের পরামর্শ দিন। (ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে)

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *